মেকানিকাল জব সেক্টর
(ফার্মাসিটিক্যাল)
বিশ্বের ৪০তম শীর্ষ ঔষধের বাজারের দেশ বাংলাদেশ। BAPI এবং DGDA এর মতে, বাংলাদেশে ২৫৭ টি রেজিস্ট্রার্ড কোম্পানি থাকলেও সচলভাবে ঔষধ উৎপাদন করে মাত্র ১৫০টি কোম্পানি যা দ্বারা দেশের ৯৭% চাহিদা পূরণ হয়। এর মাঝে Allopathic, Homeopathic, Unani, Ayurvedic, Harbal এই বিভিন্নধরনের ঔষধ উৎপাদনকারী কোম্পানি আছে। প্রায় ১০৭ টা দেশে ঔষধ রপ্তানি করে বাংলাদেশ যার মাঝে মায়ানমারে সবচাইতে বেশি। ভবিষ্যতে তৈরি পোশাক শিল্পের উপর চাপ কমাতে সক্ষম এই ঔষধ সেক্টর যা কিনা ২০১৮ সালের "প্রোডাক্ট অফ দ্যা ইয়ার"।
যাজ্ঞে, আমাদের এতকিছু দরকার নাই। আমাদের দরকার চাকরি। মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি কেমন এই সেক্টরে!!! এইটুকু জানলেই হবে আমাদের। তাও সম্ভাবনাগুলো বলে রাখলাম আরকি।
১. এই সেক্টরকে আমি পার্সোনালি অনেক উপরে রাখি, কারণ আমাদের মাঝে অনেকেরই চাকরি বাকরি না করে শুধুমাত্র পড়াশোনা করা সম্ভব হয়না। সেক্ষেত্রে ফার্মা হলো বেস্ট অপশন। এই সেক্টরে কাজের চাপ কম(অডিটের সময় ছাড়া), খুব রিল্যাক্সড থাকা যায়। সপ্তাহে ২দিন ছুটি থাকে বিধায় ডেডিকেটেড থাকলে যে কেউ চাকরির পাশাপাশি খুব ভালোভাবেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।
২. জব সুইচ করার প্রচুর অপশন আছে। তাড়াতাড়ি উপরে উঠতে হলে প্রথম দিকে ১.৫/২ বছরের মাঝেই জব সুইচ করা উচিত। উপরে উঠার পর ৫-৬ বছর পর পর চেঞ্জ করা ভালো।
৩. কোন হৈচৈ নাই (পরিবেশ বেশ ভালো)।
৪. স্বাস্থ্য ঝুকি অতটা নাই। তবে কিছু কিছু ফ্যাসিলিটি তে অল্প পরিমানে আছ যেমনঃ হরমোন,অনকোলজি,স্টেরালাইজেশান।
৫. প্রোপার সেফটি মেইনটেইন করা হয়।
৬. বড় বড় কোম্পানি(উল্লেখিত) তে মেডিকেল ফি আছে। মেডিকেল ফি বলতে বুঝায়, সারা বছর নিজের ট্রিটমেন্ট বাবদ যে খরচ হয়, তার সম্পূর্ণই কোম্পানি বহন করে। ফ্যামিলির হলে একটা লিমিট পর্যন্ত দেয়।
৭. খারাপ দিক বলতে, এই সেক্টরের অভিজ্ঞতা, অন্য সেক্টরে কম কাজে আসে। তাই ঢুকার আগে ভেবে চিনতে ঢুকা ভালো। কেউ যদি পড়াশোনা করতে চায় তবে চোখ বন্ধ করে ঢুকতে পারেন। আরেকটা বিষয় হলো, এখানে নিজে থেকে খুব বেশি আগ্রহী না হলে, মেকানিকালের জিনিসগুলা সম্পর্কে খুব বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব না।
৮. এই সেক্টরের একটা এক্সট্রা অপর্চুনিটি বলা যায় FAT: Factory Acceptence Test.
যেসব দেশ থেকে মেশিন আনা হয় মেশিন আনার আগে অই দেশে গিয়ে একটা টেস্ট করতে হয় যে মেশিনের সব ঠিক ঠাক আছে কিনা। ইন্ডিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন কান্ট্রিতে যেতে হয়। এগুলো অনেকটা ট্যূরের মত করেই নেয়া যায় যা কিনা এই সেক্টরের অন্যতম ভালো দিক বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে মেইনটেন্যান্স টীমে থাকা বাঞ্চনীয়।
কোথায় ঢুকবো??
দেশের শীর্ষ ১০ টি ঔষধ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো হলোঃ (২০১৮ সালের IMS Health রিপোর্ট)
১. স্কয়ার
২. ইনসেপ্টা
৩. বেক্সিমকো
৪. রেনাটা
৫. হেলথকেয়ার
৬. অপসোনিন
৭. এসি আই
৮. এস্কেএফ
৯. এরিস্টোফার্মা
১০. একমি
কাজ কি???
বর্তমানে ফার্মা তে কাজের ৩টা সেক্টর আছে ইঞ্জিনিয়ারদের।
১.মেইন্টেনেন্সঃ
মেইন্টেনেন্স বলতে মেশিন, ইউটিলিটি দেখা। ইঞ্জিনিয়ারদের মেইন কাজ এটাই হওয়া উচিত। এই সেক্টর উপরে উঠার জন্যে সহায়ক। কোম্পানি থেকে বাইরের(দেশের বাইরে) পাঠানোর অপর্চুনিটি বেশি।
২. প্রজেক্টঃ
একটা বিল্ডিং এর লে আউট, কোন জায়গায় কি বসবে, তার লে আউট, মেশিন ইনস্টলিং, কমিশনিং। প্রজেক্টের কাজ শেষ হলে মেইন্টেনেন্সের কাজ শুরু হয়। এক্ষেত্রে বাইরে যাওয়ার অপর্চুনিটি কম।
৩. ভেলিডেশানঃ
৭০% ডকুমেন্টেশান রিলেটেড কাজ+৩০% ইঞ্জিনিয়ারিং। এক্ষেত্রেও বাইরে যাওয়ার অপর্চুনিটি কম।
সার্কুলারঃ
সাধারণত বিডি জবসে সার্কুলার দেওয়া হয়। তবে ইন্টার্নাল রিক্রুটমেন্টও হয়। সেক্ষেত্রে ভার্সিটির বিভিন্ন জব গ্রুপ গুলোতে সিনিয়র যারা আছেন, তারা পোস্ট করেন।
স্যালারীঃ
ফ্রেশার হিসেবে আমার কাছে খারাপ মনে হয় না।
ইনক্রিমেন্টঃ
স্যালারির ১২-১৮%। কোন কোন কোম্পানিতে বেসিকের ঐ পরিমাণ,
আবার কোন কোন কোম্পানিতে গ্রস সেলারির অই পরিমাণ ইনক্রিমেন্ট হয়। এভারেজ ৩-৫ হাজার ইনক্রিমেন্ট হয়। তবে ম্যানেজার চাইলে ৮/৯ হাজারও হতে পারে।
আবার কোন কোন কোম্পানিতে গ্রস সেলারির অই পরিমাণ ইনক্রিমেন্ট হয়। এভারেজ ৩-৫ হাজার ইনক্রিমেন্ট হয়। তবে ম্যানেজার চাইলে ৮/৯ হাজারও হতে পারে।
বোনাসঃ
ফেস্টিভ্যাল বোনাসের পাশাপাশি এই কোম্পানিগুলোও ইয়ারলি প্রফিট শেয়ার করে এবং কোম্পানিভেদে ৫০+ কে হয়ে থাকে।
যেকোনো বিষয়ে যেকোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন। জেনে হলেও জানানোর চেষ্টা করবো।
চলবে.....
চলবে.....
- সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রসমূহ: http://bit.ly/2q5O47a
- ১ম পর্ব (অটোমোবাইল): http://bit.ly/2q5ObzC
- ২য় পর্ব (ফার্মাসিউটিক্যাল): http://bit.ly/32MB0kb
- ৩য় পর্ব (সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি: http://bit.ly/2OkAvc6
- ৪র্থ পর্ব (স্টিল ইন্ডাস্ট্রি): http://bit.ly/2KmRWaL
- ৫ম পর্ব(তেল ও গ্যাস):http://bit.ly/2OBAZdU
ধন্যবাদ
চুয়েট
এনপিসিবিএল
No comments:
Post a Comment
Thanks for comment stay with us.