জীবনের লক্ষ্য
আমরা সবাই জীবনের লক্ষ্য রচনা পড়েছি। পরীক্ষায় লিখে অনেক নম্বর পেয়েছি। জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে আমাদের সমস্যা নাই!যাইহোক আজকে আমি পাঠ্য বইয়ের রচনা শোনাবো না।
রচনায় আমাদের সবার জীবনের লক্ষ্য থাকে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার! বাস্তব জীবনে এর সাথে বেশকিছু পেশা জুড়ে দিলে হয়তো কারো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু যদি এককথায় বলতে বলা হয় জীবনের লক্ষ্য কী? এর উত্তরে আমি বলবো 'সুখ' হ্যাঁ আপনি ঠিকি শুনেছেন আমরা সবার সুখী হতে চাই। আর এটাই জীবনের প্রধান লক্ষ্য।
সবাই সুখী হতে চাই কিন্তু অধিকাংশ ব্যক্তি সুখের সন্ধান পান না। সুখী হতে হলে প্রথমেই জানা উচিত সুখ কী। তাহলে সুখ কাকে বলে?
জাতীয় শুদ্ধাচার ক্লাসে একবার স্যার আমাদের জিজ্ঞেস করলো। বলেন তো সুখ কাকে বলে। আমাদের মধ্যে দুয়েক একজন উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে যাচ্ছিলো ঠিক সেই সময় স্যার বললো, আপনারা সবাই ইঞ্জিনিয়ার বা সাইন্টিফিক অফিসার। গাণিতিক ভাবে প্রকাশ করেন। সবার জানা কিন্তু কেউ প্রকাশ করতে পারলো না। স্যার সুখকে এভাবে প্রকাশ করলো
সুখ=(চাওয়া-পাওয়া)
সমীকরণ থেকে আমরা বুঝতে পারছি সুখ আপেক্ষিক বিষয়। চাওয়ার পরিমাণ কমলে আর পাওয়ার পরিমাণ বাড়লে আমরা সুখ বাড়বে।
এখন স্কুল জীবনে যে রচনা লিখতাম সেখানে ফিরে আসি। একজন বাচ্চা জন্মের পর তার উপর ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার লক্ষ্য চাপিয়ে দেয়। এটা কোনভাবেই ঠিক না। একজন ছাত্রের বিজ্ঞান ভালো লাগে না, গণিত ভালো লাগে না, রক্ত দেখলে ভয় পায় আপনি জোর করে ডাক্তারি বিদ্যা চাপিয়ে দিলে কোনভাবেই সফল হবে না।
এভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ না করে আমরা আমরা আমাদের জীবনকে কয়েকভাগে ভাগ করে নিতে পারি। একটা লেভেলে গিয়ে যখন সে বুঝবে লক্ষ্য নির্ধারণ করবে। সবগুলো ধাপ লিখতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে। আর আমরা যেহেতু সবাই ইঞ্জিনিয়ার/ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট ধাপগুলি স্কিপ করে মূল আলোচনায় ফেরা যাক।
ধারা যাক আপনি চাকুরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমাদের সবার একটায় লক্ষ্য ভালো চাকুরী। চাকুরী পেলে রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে। কিছু ক্ষেত্রে কথা সত্য। পড়ালেখা আর পারিবারিক প্রেশার চ্যাপটা হয়ে যাচ্ছেন। সব বাধা অতিক্রম করে একটা ভালো চাকুরি ☺।
যুদ্ধ শেষ! আপনি সফল? আপনি নতুন একটি মাইলফলক অতিক্রম করেছেন। এবার আপনাকে ঠেকায় কে। চারপাশে এতো প্রশংসা আমি নিজেকে সেলিব্রিটি ভাইতে শুরু করেছেন। এই পর্যায়ে অনেকের পা মাটিতে থাকে না। হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। খাম খেয়ালি আচরণ করতে থাকে। একটু শান্ত হোন আপনি এক্সাইটেড আছেন। আপনার মুই কী হনুরে টাইপ আচরণের কারণে এতোদিন যারা আপনাকে নিয়ে গর্ব করতো তারা এতো দূরে চলে যাবে আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না। মনে রাখবেন মানুষ সামাজিক জীব। আর আমাদের দেশের লোকজন একটু বেশিই সামাজিক। দেহের মাথা বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মতো সমাজও আপনার দেহের অপরিহার্য অঙ্গ।তাদের ছাড়া আপনি কখনও প্রকৃত সুখ পাবেন না।
এরপর আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আছে। আপনি ঠিক ধরেছেন বিয়ে😋। অভিজ্ঞতা না থাকায় লিখলাম না। আমার মনে হয় এটায় সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং।
সুখী হওয়ার জন্য অতিরিক্ত কিছু করা লাগবে না। আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন। এটাই যথেষ্ট। দায়িত্ব অবহেলা, স্বজনপ্রীতি আর ঘুষ গ্রহন থেকে বিরত থাকুন। জব পাওয়ার আগে জব পেলে কীভাবে দায়িত্বশীল হতে চায়তেন তার সাথে মেলানোর চেষ্টা করবেন। দায়িত্ব পালনে সুবিধা হবে। আর আপনার জীবনের সব কিছু রেকর্ড হচ্ছে। একদিন সৃষ্টকর্তার কাছে হিসাব দেওয়া লাগবেই। সবার জন্য শুভকামনা রইলো।
#আমি লিখালিখি করিনা। ভুল হলে ক্ষমা করবেন। অলস সময়ে খাতা কলম ছাড়া কয়েক লাইন লিখার চেষ্টা করলাম।
সাদ্দাম হোসেন
এক্সেকিউটিভ ট্রেইনি(মেকানিক্যাল)
রুপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট
No comments:
Post a Comment
Thanks for comment stay with us.